Thursday, July 25, 2024
HomeBreakingফুলবাড়ীতে শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে,জমি দখলে মদতের অভিযোগ!

ফুলবাড়ীতে শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে,জমি দখলে মদতের অভিযোগ!

নিজস্ব সংবাদদাতা শিলিগুড়ি ১৬ মার্চঃদীর্ঘ ৪০ বছর পর মালিকের দেখা মিলল। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে প্রচুর বাড়িঘর করে সরকারি জমি ভেবে ওই জমিতে বসবাস করে আসছেন কয়েক শত মানুষ। আচমকা আদালতের নথি নিয়ে হাজির মালিক। সবাই জানতেন ওই জমি সরকারি,আর সেই সরকারি জমিতেই আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন তারা। কিন্তু আচমকা মালিক আসতেই সব ওলট-পালট হয়ে গেল শিলিগুড়ির ফুলবাড়িতে।

জমির মালিকের অভিযোগ, যারা বাড়িঘর করে রয়েছেন তাদের সরে যাওয়ার জন্য বলা হলেও স্থানীয় তৃনমুল নেতার মদতেই ঐ জমি দখল করে বসে আছেন তারা। আর ঐ জমি দখল মুক্ত করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখেও পড়লেন জমির মালিক।

জমি তুমি কার?
আর তা নিয়েই বাক বিতন্ডা লাগলো ফুলবাড়ি ১নম্বর অঞ্চলের অন্তর্গত উত্তরকন্যা সংলগ্ন শ্রীনগর এলাকায়।
তৃনমুলের দুই নেতার মতবিরোধেই নাকি চলছে জমি দখল ও দখল মুক্তের কাজ।একজন আদালতের নির্দেশ মেনে জমি নিজের হস্তান্তরে নেওয়ার চেষ্টা করতেই বিপরীতে গ্রামবাসীদেরকে উসকিয়ে দিয়ে সেই জমি তাদের দিয়ে দখল রাখার চেষ্টা করছে অপর নেতা বলেই অভিযোগ।
কিন্তু কে এই তৃনমুল নেতা? কাদের নাম উঠে আসছে এই জমি কান্ডে?

বিগত সময় উত্তরকন্যা পার্শ্ববর্তী সরকারী জমিতে এনজেপি থানা তৈরির কথা জানায় রাজ্যে সরকার। এলাকার মানুষজন জানত ওই জমি একোয়ার ল্যান্ড। দীর্ঘদিন ধরে ওই জমিতে এক এক করে গড়ে ওঠে বাড়িঘর। থানা হওয়া তো দুরঅস্ত, সরকার ওই জমিতে কোনরকম সাইনবোর্ডও লাগায়নি। ওই জমি গুলির প্রায় অধিকাংশ এলাকায় বিগত ৪০ বছর যাবত ধীরে ধীরে মানুষ বসবাস শুরু করে। সরকারী সমস্থ সুবিধা তারা পেয়ে থাকেন। পাশাপাশি, খাজনা,ইলেকট্রিক বিল সবই তারা দিয়ে থাকেন।
কিন্তু আদালতের নথি নিয়ে হাজির হওয়া জমির মালিক ফুলবাড়ির তৃনমুল নেতা মহম্মদ আহিদ,যার ডাক নাম চুটকি তার স্ত্রীর দাবি, জমির অধিকাংশই তাদের। তার দাবি তার কাছে রয়েছে আদালতের নথি। কিন্তু অভিযোগ বলপূর্বক কিছু বহিরাগত তাদের জমি দখল নিতে সমস্যার সৃষ্টি করছে। আর সেই কারনেই তিনি জমি ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন। তার দাবি আদালত তাদেরকে মালিকানাসত্বা প্রদান করায়,শনিবার নিজেদের জমি ফিরে পেতে মাপযোগ শুরু করেন মহম্মদ আহিদের স্ত্রী রোহিনা খাতুন। তার অভিযোগ সেই সময় বাধা দেন স্থানীয়রা।স্থানিয়দের দাবি, সরকার চাইলেই তারা এখান থেকে অন্যত্র সরে যাবেন।যে কেও এসে আদালতের কাগজ দেখিয়ে সরকারী জমিকে নিজের জমি বললে তা তারা মানবেন না।
অন্যদিকে নিজের জমি বলে দাবি করা তৃনমুল নেতা মহম্মদ আহিদের স্ত্রী রোহিনা খাতুন জানান,এই ঘটনায় স্থানীয়দের তার জমিতেই বাড়িঘর করে আগের মতন থাকার মদত দিচ্ছেন তৃনমুল শ্রমিক সংগঠনের এক নেতা ও প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান। তার অভিযোগ তারাই কিছু মানুষকে দিয়ে জমি দখলে রাখার চেষ্টা করছে।
এই বিষয়ে জমি দখলে রাখার মদত দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত তৃণমূলের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা সুকান্ত কর ও প্রাক্তন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান নমিতা করাতি ক্যামেরার সামনে সংবাদ মাধ্যমকে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে আমার বাংলাকে দেওয়া টেলিফোনিক কনভার্সেশনে সুকান্ত করের সাফ কথা, দীর্ঘ ৪০ বছর যাবত ওই জমিতে প্রচুর মানুষ বসবাস করছেন। তাদেরকে উচ্ছেদ একমাত্র সরকার করতে পারে পুনর্বাসনের মাধ্যমে। তবে তার দাবি ওই জমি অ্যাকুয়ার ল্যান্ড। ওই জমিতে নিউ জলপাইগুড়ি থানা হওয়ার কথা ছিল বলেও জানান সুকান্তবাবু। সুকান্তবাবুর সাফ কথা, তিনি কাউকে কোন রকম উস্কানি দেননি, আইন আদালত পুলিশ প্রশাসন যদি মনে করে নির্দিষ্ট জমির কোন মালিক রয়েছে, নিশ্চয়ই আইন মেনে সে সেই জমি পাবে। সুকান্ত বাবু বলেন, সরকারি জমি থেকে অসহায় মানুষদের উচ্ছেদের বিরোধী তিনি।

কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন জমি কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে কড়া ব্যাবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের মিনি সচিবালয়ের ঠিক পেছনে এমন অভিযোগ উঠল? তাও আবার শাসকদলের এক নেতা ও তার স্ত্রী শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধেই জমি দখলের মদতের চেষ্টার অভিযোগ আনলেন? গোটা ঘটনায় শাসক শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে। এখন এটাই দেখার গোটা বিষয়টি নিয়ে কি ব্যবস্থা নেয় রাজ্যে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। বিউরো রিপোর্ট আমার বাংলা।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments